যেন কোনো জাতিস্মর
অহেতু শৈশব নিয়ে
শুয়ে আছে
আকাশের
তারাদের নিচে
যেন কেউ আর নাই বহু বহু দিন ধরে
সমুদ্রের পারে যেন
রোদ নাই
ছায়া নাই
অন্ধকার
যারা ছিল চলে গেছে
তোমার যাওয়ার কোনো কিছু নেই
যে যেখানে নিয়ে যাবে
নিয়ে গিয়ে ছেড়ে যাবে
তেমন থামার কোনো স্পষ্ট চিহ্ন নাই আর
অস্পষ্ট আলোর মত
তুমি অন্ধকার তুমি
যেন এই অন্ধকার বিকাল বেলায়
সময় হারায়ে গেল বেলাভূমে
বালুতটে
সমুদ্রের পারে
যেন কাশবনগুলি শুধু চেয়ে আছে
উদ্ভিদের মাতৃরূপ হয়ে
তারা সঙ্গ দেবে দূর থেকে
যেমন পানির শব্দ চারধারে
যেমন পাখির ঝাপটা
সন্ধ্যাবেলা
যেমন দিনের শুরু সন্ধ্যাবেলা
অকস্মাৎ
যেন এই ভিজা বালু
স্মরণ করছে তুমি কবে থেকে
কোথা থেকে
কখন জন্মের শুরু
কখন মৃত্যুর শুরু
শুয়ে আছো কোন সেই শতাব্দিরও আগে
যেন চাপা পড়া বালু শুধু
মৃত্যু মনে রাখে
যেন তোমার পিঠের নিচে
পায়ের তলায়
ঠাণ্ডা বালু কাদা কাদা
এ পৃথিবী জায়মান
তোমাকে জাপটে আছে
রিরংসার মত
যেন চুলের ছিটিয়ে থাকা
সমুদ্রের পার এসে
জোর করে
ভিজিয়ে দিয়েছে
তবু
তুমি শুয়ে আছো বলে
অন্য কিছু ঘটার কিছুই নেই
যেন করার কিছুই নেই
দূরে কালো সার বাঁধা পাহাড়েরা
দ্রুত যাচ্ছে চলে
বাতাসের অন্ধকার
চারপাশে প্রদক্ষিণ রত
হাওয়া জলকণা
সাজিয়ে রেখেছে
তুমি ভেসে উঠছো অতি ধীরে
যেন তুমি উঠছো না কোথাও
যেন
অন্ধকার ফুঁড়ে
আপন অক্ষ ধরে ঘুরে যাচ্ছে জীবদেহ
অনিঃশেষ
ঘুরছে না মোটেই
যেন চক্রাকার সংক্রামক
অবসন্ন কাল
আপনার তিরোভাব
নির্দেশ করেছে
এই আকাশের নিচে
এই তারকার নিচে
এই জটিল সমুদ্রবাষ্প অধ্যুষিত
বেলাভূমি ধরে
ফেলে যাওয়া পদচ্ছাপ
রয়েছে সান্ত্বনা হয়ে
যেন প্রয়োজনহীন মৃত্যু
আগুয়ান
যেন এই মৃত্যু সাবলীল, সাদা মৃত্যু
ভেজা মৃত্যু
অন্ধকারে যে কোনো মৃত্যুর মত
ইচ্ছাজাগানিয়া
শুধু যেন হাওয়া বয়
যেন আমি শুয়ে আছি
ঘুম থেকে জাগার আগেই যেন
বালুতটে, পড়ে আছি
যেন আমি আমবনে জুঁইশাখে
রয়েছি জড়ায়ে।
১৬.৯.২০১০