মানুষের মৃত্যু ভালো
তাই মৃত্যু হোক
সকলের।
ঘরের দরজা থেকে
যে মুহূর্তে পা ফেলেছো
বাইরে তুমি
শিশির বিন্দুগুলি
দেখবে বলে
শিশির বিন্দুগুলি
দেখার আগেই—
হোক তবে তব মৃত্যু
ছাদ ধসে, লিফট ছিঁড়ে
সিঁড়ি উল্টে গিয়ে।
মৃত্যুর দাপট থেকে
অকপট
বাইরে বাইরে থাকো তুমি
ঘর থেকে বাইরে যাও
বাইরে থেকে ঘর
এমন বিচিত্র বিশ্ব
তোমার সুন্দর—
অকারণ ধসে যাক
ধূলিকণা হয়ে যাক
পড়ে থাক পথের ধূলিতে
তব ছিন্নভিন্ন দেহ
প্রভুর সকালে।
প্রতিদিন গড়ে উঠছে
বেড়ে উঠছে
ফুলে ফলে ছেয়ে যাচ্ছে বাজারে বাজার
ছোট মেয়ে স্কুল থেকে
ফিরে আসছে ঘরে
হাতে ফুল, স্কুলব্যাগ
পথে মারা যাক!
তোমার সন্তান থাকে
নিরাপত্তাময় বৈদেশে
মার্কিন শহরে
বা কানাডায়
বা অস্ট্রেলিয়ায়
বা কি লন্ডনে
পাতাল রেলের মধ্যে
মৃত্যুহীন ঘুরতে থাকে তোমার সন্তান
তারা মরে যাক
ডলার পাউন্ড সহ
খাক হয়ে যাক সব—
বিদেশে বিভূঁইয়ে।
সকলের মৃত্যু ভালো
তাই মৃত্যু হোক সকলের—
গাধাদের মৃত্যু হোক ঘোলাজলে, ডাঙায় সাধুর
স্টেডিয়ামে ঝাড়ুদার
তার সূর্য ওঠার আগেই
মরে যাক। চিৎ হয়ে পড়ে থাক সবুজে ঘাসেতে।
কবিদের মৃত্যু হোক বইয়ের দোকানে
অবিক্রিত বইয়ের পাশেই
সমাহিত থাক তারা
বর্ষা এলে রৌদ্রে দিতে হবে।
পৃথিবীর সুন্দরীরা মরবে নাকি
বিউটি পার্লারে?
রূপরসগন্ধহীন
আয়না ধরে ধরে।
মরার আগেই যেন
শ্যাম্পু তারা করতে পারে
যেন ভ্রু প্লাক করার পরেই
মৃত্যু হয় সব সব কপি সুন্দরীর।
আমাদের মৃত্যু হোক
শান্ত অপরাহ্ণে কোনো গাঙের ধারেতে
যেন কলসের থেকে জল
গড়িয়ে পড়ছি আমরা গাঙুরের জলে
যেন বজ্রপাত হলে
কিংবা না হলেও
ইশ্বরকৃপায় আমরা মরে যাব দলে দলে তুলসীতলায়
তুলসীতলায় গাব যমুনা কি তীর—
এ জীবন ছিল তাই
আছে মনে হয়, যেন
মৃত্যু এসে নিয়ে গেছে
অতর্কিত গুমঘরে, মর্গে কোনো
ম্যানহোলে
নর্দমায়, মর্গে কোনো
কিংবা স্রেফ র্যাবের গাড়িতে
হায় র্যাবের গাড়িতে!
কমদামি মৃত্যু ঘটে গেলে পরে পড়ে রইব
খালপাড়ে বাধপার্শ্বে লাউপাতা বিস্তারিত
গরিব জমিতে।
পড়ে রইবে দেহলতা পাশেই পিস্তল
রাষ্ট্র দেবে দোলা
খোলা হাওয়া বইবে ধীর
অসম্মানে
যেন আমি মৃত্যু ভুলে, আমবনে
জুঁইশাখে
রয়েছি জড়ায়ে। তাই
সকলের মৃত্যু যদি নাই বা হলো
পাড়ে যাওয়া
নাই বা হলো
আমারও হবে না, আমি বসে রইব এ শহরে
মৃত্যুর উল্লাস—
ছড়ায়ে ছড়ায়ে যাব
মৃত্যুর উল্লাস
যাতে
একটি মৃত্যুও আর
মৃত্যুরূপে প্রতিভাত
না হয় কখনো।
২৪/২/২০১১ – ১২/৩/২০১১
1 Comment
Add Yours →কিছু একটা খামচায়া ধরল।