ভূমিকা
আমি তখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এ চাকরি করতাম। আর্টস সাহিত্য পাতাটা তখন আমার সম্পাদনায় বাইর হয়। সে পাতায় ৬ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে ছাপা হইল অদিতি ফাল্গুনীর ভূমিকাসহ মোদাস্বার হোসেন মধু বীর প্রতীক প্রণীত ডায়রির অংশ।
লেখার নাম ছিল: “বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ এবং ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্ট’ গঠনের মূল ইতিহাস”।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: অদিতি ফাল্গুনী ও ব্রাত্য রাইসু
এই ডায়রি ছাপা হওনের পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও ফেসবুকে কারো কারো পক্ষ থেকে দাবি উঠল , এই নামে কোনো মুক্তিযোদ্ধা কখনো ছিল না। তারা এর প্রমাণ স্বরূপ ‘বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা’র লিংক সরবরাহ করলেন।
দেখা গেল সেই তালিকায় মোদাস্বার হোসেন মধু বীর প্রতীক নামে আদৌ কোনো মুক্তিযোদ্ধা নাই।
অদিতি বললেন অবশ্যই মোদাস্বার হোসেন মধু বীর প্রতীক ছিলেন। তার সঙ্গে তিনি কথা বলছেন সেই ২০০০ সালেই। তার উপর লেখা ছাপাইছেন দি ডেইলি স্টারে। সে লেখার কাটিংও দেখাইছিলেন তিনি। সেইখানে ৭/১২/২০০০ তারিখের কাগজে হুইলচেয়ারে মধু ও তাঁর বন্ধু গোলাম মোস্তফা বইসা আছেন। কিন্তু ডেইলি স্টারে ছাপা মানেই বিশ্বাস করতে হবে এমন তো না।
অদিতি ফাল্গুনীর লেখা ছাপা হওয়ার আগেই (নভেম্বর ২০১১) আমি বিডিনিউজ থিকা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়া কর্তৃপক্ষরে জানাইয়া দিছিলাম। ওনারা ডিসেম্বর শেষ কইরা যাইতে বললেন। আমার দিক থিকা দায়িত্ব ছিল, ডায়রি ছাপাইয়া যে বিতর্কের সূত্রপাত—তার আশু সমাপন টানার।
দেখা গেল, মৃত মধুর অস্তিত্ব এমন সংকটে যে তিনি প্রায় নাইই—মানে ছিলেনই না এমন অবস্থা! আর আমাদের দরকার তার অতীতের বর্তমানময়তা মানে অতীতে তিনি যে ইহজগতে ছিলেন, এবং বীর প্রতীকও ছিলেন—সেইটা প্রমাণ করার।
সুতরাং, অদিতি বলছিলেন, মধু মারা গেছেন কিন্তু গোলাম মোস্তফা তো জীবিত! আমরা তার কাছে গিয়া দেখি তিনি কী বলেন। তো আমাদের—গোলাম মোস্তফা থাকেন মোহাম্মদপুরে—সেইখানে যাইতে হয়! এক শনিবারে, ২৪/১২/২০১১, আমরা যাই। গিয়া দেখি গোলাম মোস্তফারা যেইখানে থাকতেন সেইখানে লোহার পুকুর। ‘যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা রোগমুক্তি বিশ্রামাগার’-এর বিল্ডিং ভাইঙ্গা পাতালে পাইলিং চলতেছে। নিচ থিকা ঝাকে ঝাকে লোহার শিক উপরে উইঠা আসতেছে। পাশেই ফুটপাতলগ্ন তেরপলমারা অস্থায়ী অফিস। তাতে ঢুইকা দেখি দুয়েকজন আছেন। তারা জানাইলেন, গোলাম মোস্তফা কাছেই আছেন কোথাও, তিনি আসতেছেন।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হক বীর প্রতীকরে দিয়া কথা শুরু করলেন অদিতি ফাল্গুনী। রাস্তায় আওয়াজ বেশি থাকায় রেকর্ড করতে অসুবিধা হইতেছিল। ওনারা আমাদের নিয়া গেলেন কাছেই ১/৬বীর উত্তম নুরুজ্জামান সড়কের ‘রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতাপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থান-এর আঙিনায়। সেখানে অন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলি আমরা। এবং সব কথা মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করা হয়।
মধুর ব্যাপারে কথা বলছিলেন মোঃ গোলাম মোস্তফা বীর বিক্রম বীর প্রতীক, মোঃ সামসুদ্দিন বীর প্রতীক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শুকুর আলী। এ ছাড়া মনোয়ারা সামসুদ্দিন, আবুল কাশেম ও আবদুস সোবাহান মন্টুও মোদাস্বার হোসেন মধু বীর প্রতীকের এক সময়ে অস্তিত্বশীল থাকার ব্যাপারটা নিশ্চিত করেন। তারা জানান যে মধু এখন আর নাই—২০০৫ সাল থিকাই নাই। তবে তার স্ত্রী এখনও সরকারি ভাতা পাইতেছেন। মুক্তিযুদ্ধে মধু চাপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ এলাকায় বন্দুকের গুলি লাইগা আহত হন। পরে ভারতে চিকিৎসা নেন ১৯৭২ সালে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামলের শেষ দিকে ১৯৭৯ সালে ২৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে তিনিও বীর প্রতীক পদকে ভূষিত হন। তবে তাদের সেই তালিকা কখনো গেজেট ভুক্ত হয় নাই।
বিডিনিউজে এই আলাপ ছাপা হয় ৩০ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে। ৩১ তারিখের পরে আর্টস থিকা মুক্তিলাভ ঘটে আমার। বিডিনিউজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ এই সাক্ষাৎকার ছাপানোর জন্যে।
ব্রাত্য রাইসু, ২৫/১/২০১৩
সাক্ষাৎকারের ভিডিও
মোদাস্বার হোসেন মধু বীর প্রতীকের বন্ধু ও পরিচিতজনদের ভিডিও সাক্ষাৎকার।
সাক্ষাৎকারের লিখিত রূপ
অদিতি ফাল্গুনী: মোদাস্বার হোসেন মধু বেঁচে ছিলেন। তারপরে উনি মারা গেছেন। ওনার একটা ডায়রি ছিল, ডায়রিটা আমি ছাপালাম, ছাপানোর পরে কেউ কেউ বলতেছেন উনি নাকি ছিলেন না–এটা নাকি কল্পনা, এটা নাকি বানোয়াট, তাই কি?
তোজাম্মেল হক: না না না। আমরা আগাগোড়া এখান থেকে আছি, একসঙ্গে ছিলাম। উনি মারা গেলো, মারা যাওয়ার পরে… উনার অনেক কিছু কথা আছে–সেরকম–উনি প্রথমে গুলি লাগা সৈনিক, তারপরে প্যারালাইসিস, উনি যা কিছু বলতো সত্যি বলতো এবং যা ন্যায় বলতো এবং যা জাতির কাজে লাগবে… এবং সেগুলোর কথাই উনি বলতো।
অদিতি ফাল্গুনী: এটা তো অস্থায়ী অফিস? ওই যে আপনাদের যে বিশ্রামাগার…?
তোজাম্মেল হক: বিশ্রামাগার আমাদের স্থায়ী। এখন ভাঙ্গি ফেলাইয়ি অস্থায়ী… অনেকে ভাড়া থাকে, ফ্যামেলি নিয়া থাকে। এখন শেল্টার হইলে আমরা সবাই একত্র হবো।
অদিতি ফাল্গুনী: এইটা কবে নাগাদ মানে পুরাটা আবার ঠিক হবে?
তোজাম্মেল হক: ওই যে ২৪ মাস, দুই বছর টাইম নিছে।
অদিতি ফাল্গুনী: দুই বছর সময় দিছে।
২.
অদিতি ফাল্গুনী: আজ থেকে দশ-এগার বছর আগে আমি প্রথম আসি, এসে আপনাদের দুইজনের একটা ছবিও নিয়েছিলাম? সেটা আর কি পত্রিকাতে ছাপাও হয়েছিল, আমি দেখাই। অনেক আগের পত্রিকা [The Daily Star, 7 December 2000] –এই যে। আপনি আর এই তো মধু, তাই না?
গোলাম মোস্তফা: হ্যাঁ এই যে, ঠিক আছে। তো এইডা কী হইছে এখন?
অদিতি ফাল্গুনী: এখন ওই ছাপানোর পরে, অনেক দিন পরে আবার দুই বছর আগে এসে আপনাদের অনেকের ইন্টারভিউ নিই, তাই না? তারপরে মধুর একটা ডায়রি খাতাও আমার কাছে ছিল। তো এইগুলো নিয়ে উনার পত্রিকাতে [http://arts.bdnews24.com] একটা লেখা ছাপা হইছে। সেই লেখাটার পরে সবাই বলতেছে মধু নামে কেউ ছিল না। এটা কল্পনা, এটা আমি বানাইয়া লিখছি, আমি টাকা খাইছি…
গোলাম মোস্তফা: মোদাস্বার হোসেন মধু… ঠিকই আছে। এই যে মধু…।
ব্রাত্য রাইসু: এটা চিনেন আপনারা ওনারে?
গোলাম মোস্তফা: আরে চিনা!… আমার সাথে লাখনৌ কমান্ড হসপিটালে… একসাথেই ছিলাম, আহত হইয়া।
ব্রাত্য রাইসু: কত সালে এইটা?
গোলাম মোস্তফা: এইটা বাহাত্তর সালে।
ব্রাত্য রাইসু: হাসপাতালে ছিলেন আপনারা?
গোলাম মোস্তফা: হাসপাতালে ছিলাম। আমি ৬ ডিসেম্বর আহত হই… এবং ২০০৫ সাল পর্যন্ত আমাদের সাথে ছিলেন। ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে এই মোদাস্বার হোসেন মধু মারা যায়, শহীদ সরোয়ার্দি হাসপাতালে।
ব্রাত্য রাইসু: আচ্ছা উনি কি বীর প্রতীক ছিলেন? উনারা বলতেছিলেন উনার গেজেটে নাকি নাম নাই?
গোলাম মোস্তফা: গেজেটে নাম নাই। এইটা হলো… জিয়াউর রহমান সাব এখানে ৩৬ জনকে বীর প্রতীক দিছিলেন। ওইখান থিকা তদন্তের পরে ২৪ জন টিঁকছিল। সেই ২৪ জনের একজন হইল মোদাস্বার হোসেন মধু, একজন হল সামসুদ্দিন, একজন তোজাম্মেল, মোজাম্মেল, তারপরে নাসির উদ্দিন কামাল, কেয়াম মিরধা এইরকম আরও আরও অনেকে… ২৪ জন… এদেরকে বীর প্রতীক ঊনাশিতে দেওয়া হইছিল। জিয়াউর রহমান সাব দিয়েছিলেন। তো ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোদাস্বার হোসেন মধু। যদি কেউ বলে যে মধু বানোয়াট তাইলে তাকে আমাদের কাছে আসতে বলবেন।
ব্রাত্য রাইসু: আপনাদের কাছে কোথায় আসতে বলবো?
গোলাম মোস্তফা: বিশ্রামাগারে। এবং আমার নাম্বার দেবেন, আমার ইয়ে দিবেন যে মোদাস্বার হোসেন মধু সে মুক্তিযোদ্ধা ছিল না যদি কেউ এ রকম চ্যালেঞ্জ করে তা আমি চ্যালেঞ্জ করবো সে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ছিল, হুইল চেয়ার চলাচলকারী।
ব্রাত্য রাইসু: আপনার নাম কী?
গোলাম মোস্তফা: আমার নাম মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বীর বিক্রম, বীর প্রতীক।
ব্রাত্য রাইসু: আচ্ছা আপনি কি ফোন নম্বর দিয়া দিবেন আপনার?
গোলাম মোস্তফা: হ্যাঁ, ফোন নম্বর দিয়া দেন।
ব্রাত্য রাইসু: বলেন আপনার নাম্বার।
গোলাম মোস্তফা: আমার নাম্বার হলো 01715 76 9765।
ব্রাত্য রাইসু: যে কেউ আপনাকে ফোন করে এইটা জিজ্ঞেস করতে পারবে?
গোলাম মোস্তফা: হ্যাঁ, আরেকটা নাম্বার আছে–01552 5579 81. যে কোন লোক মোদাস্বার হোসেন মধু সম্বন্ধে যদি কিছু জানতে চায় আমার সাথে কথা বলবে। সে মুক্তিযোদ্ধা, আমি বলবো সে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ছিল, ২০০৫ পর্যন্ত সে ভাতা পেয়ে গেছে এবং ২০০৫ এর ২৯ শে অক্টোবর সে মারা গেছে। এই শহীদ সরোয়ার্দি হাসপাতালে।
৩.
মো: সামসুদ্দিন: এখন তার ওয়াইফ শহীদ পরিবার হিসেবে ভাতা পায়। এখনো পায়।
ব্রাত্য রাইসু: তাই নাকি? তো এখন যে গেজেটে যে নাই এই ব্যাপারে আপনাদের বক্তব্য কী?
গোলাম মোস্তফা: এইটা গেজেট হয় নাই… এই যে চব্বিশজনের যে… তদন্তের পরে চব্বিশজনরে টিঁকাইছিল তাদের গেজেট হয় নাই। আর এটা হলো ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন, স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য খেতাব দেওয়া হইছিল, পদক দেওয়া হইছিল। সেইটা ’৭৩-এর ১৫ই ডিসেম্বর গেজেট হইছে ৬৭৬ জনের। বীরশ্রেষ্ঠ ৭ জন, বীরউত্তম ৬৮ জন, বীরবিক্রম ১৭৫ জন, বীরপ্রতীক ৪২৬ জন। তার মিধ্যে উনাদের নাম নাই। কারণ ওই গেজেট হইছিল ’৭৩-এ আর উনাদেরকে যে বীরপ্রতীক খেতাব দেওয়া হইছিল–সামসুদ্দিন, তোজাম্মেল, মধু–এটা ’৭৯তে, জিয়াউর রহমান সাব দিয়েছিলেন।
ব্রাত্য রাইসু: উনাদেরকে দিতে দেরি হইলো কেন?
গোলাম মোস্তফা: কেন হইলো আর কীভাবে দেয় এটাও আমার জানা নাই। কারণ এইটা হলো স্পটে, যুদ্ধ চলাকালীন বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য খেতাব। কিন্তু দেশ স্বাধীনের আট বচ্ছর পরে কীভাবে তাদেরকে খেতাব দিছে এইটা আমার জানা নাই। কিন্তু উনারা, মধু, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। যদি কেউ বলে যে মধু মুক্তিযোদ্ধা না তাইলে আমি বলবো তাকে আমার সাথে কথা বলতে।
ব্রাত্য রাইসু: আপনাদের বীর প্রতীক কবে দেওয়া হইলো?
মো: সামসুদ্দিন: জিয়াউর রহমান থাকতে…।
ব্রাত্য রাইসু: ঊনাশি সালে?
মো: সামসুদ্দিন: দিন তারিখ মনে নাই। আমার কাছে তালিকাভুক্ত… সার্টিফিকেট আছে, পদক আছে, সব আছে।
ব্রাত্য রাইসু: আর মধুর সঙ্গে আপনারা কয়জন পাইছিলেন তখন?
মো: সামসুদ্দিন: আমার মনে হয়… আমি জানতাম যে ২৪ জন।
ব্রাত্য রাইসু: ২৪ জন। আচ্ছা, মধুর সঙ্গে আপনার পরিচয় কত সালে হইছিল?
মো: সামসুদ্দিন: সেভেনটি সিক্সে। মধু আমি একই রুমে থাকতাম ওই বিল্ডিং-এ, ১ বাই ১ গজনবী রোডের পশ্চিম পাশের রুমে। আমি, মধু আর মানিক কুমার দাস, একজন হিন্দু আর কি। সে মারা গেছে, মধুও মারা গেছে, আমি বাঁইচ্যা আছি।
ব্রাত্য রাইসু: [অদিতি ফাল্গুনীকে] মধুর ডায়রিটা একটু বের করবেন? [মো: সামসুদ্দিনকে] মধুর হাতের লেখা চিনেন আপনি?
মো: সামসুদ্দিন: দেখলে তো চিনবোই। চিনার কথা।… শোনেন আমিও চাকরি করি নাই, মধুও চাকরি করে নাই।… মোদাস্বার হোসেন মধু… এটা তার হাতের-ই লেখা।
ব্রাত্য রাইসু: তার হাতের লেখা?
মো: সামসুদ্দিন: হ্যাঁ।
ব্রাত্য রাইসু: তো এখন তো ধরেন এই যে বীর প্রতীক আপনাদের দিলো আবার নিলো গিয়া বা…।
মো: সামসুদ্দিন: না নিছে না তো! নেয় নাই, আমার তো এহনও আছে। সার্টিফিকেট আছে, পদক আছে–সব আছে।
ব্রাত্য রাইসু: আচ্ছা গেজেটে যে নাই এই ব্যাপারে আপনাদের কোনো… আপত্তি করেন নাই আপনারা?
মো: সামসুদ্দিন: এটায় আমার কোনো মন্তব্য নাই। কামলা খাটাইছেন আপনে, তালিকাভুক্ত করার দায়দায়িত্ব আপনার, তালিকা করবেন কি না করবেন–সেটা আপনার ব্যাপার। আমি মুক্তিযোদ্ধা, আবারও বলি আমি ধ্রুবসত্য মুক্তিযোদ্ধা, দেশ এবং জাতির জন্য লড়াই করছি। আমার যুদ্ধকালীন কোম্পানীর কমান্ডার ছিল উপদেষ্টা মতিন। আপা [অদিতি ফাল্গুনীকে] শোনেন, এডভাইজার মতিন আমার যুদ্ধকালীন কোম্পানী কমান্ডার। আমি আখাউড়ার আজমপুরে লড়াই করছি। ডিসেম্বরের ৪ তারিখ শেলের আঘাতে আহত হইছি।
ব্রাত্য রাইসু: আচ্ছা। আর মধু কোথায় আহত হইছেন?
মো: সামসুদ্দিন: মধু তো সাত নম্বরে…।
৪.
মতিউর রহমান: চাঁপাইনবাবগঞ্জে এটা হচ্ছে… কী বলে একে… সোনা মসজিদ।
ব্রাত্য রাইসু: ওইখানে সে কি শেলের আঘাতে…?
মতিউর রহমান: তা বলতে পারবো না।
গোলাম মোস্তফা: বুলেট লাগছিল।
ব্রাত্য রাইসু: তাইলে মধু বইলা একজন আছে দেখা যাইতেছে আপনাদের কথামতো।
মতিউর রহমান: ডেফিনেটলি আছে। মোদাস্বার হোসেন মধু।
মো: সামসুদ্দিন: মধু নামে ছিল… এহন নাই। এহন তো তার বউ ভাতা পাচ্ছে।
ব্রাত্য রাইসু: হ্যাঁ তাই তো।
মো: সামসুদ্দিন: বুঝছেন, মধু নামক একজন শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা ছিল…
ব্রাত্য রাইসু: এবং সরকারের এখান থেকে ভাতাও পাচ্ছেন উনি?
মো: সামসুদ্দিন: এখনও পাচ্ছে।
মতিউর রহমান: আমি একটা তথ্য আপনাদেরকে দিই…
ব্রাত্য রাইসু: আপনি কোথায় ছিলেন?
মতিউর রহমান: আমি ওদের আগের কথাটা বলি। এই যে জিয়াউর রহমানের যে পদক প্রদান এটা কিন্তু যথাযথ কমিটি করে অনুমোদন হইছে।
মো: সামসুদ্দিন: জ্বি জ্বি।
মতিউর রহমান: যথাযথ কমিটি কইরা।
মো: সামসুদ্দিন: “অনুমোদিত হইল–জিয়া” লেখা আছে।
মতিউর রহমান: কমিটির এ্যাপ্রুভাল আছে এবং ফাইনাল এ্যাপ্রুভাল আছে জিয়াউর রহমানের… এটা এই কমিটির রিপোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের কল্যাণ বিভাগে আছে।
ব্রাত্য রাইসু: আচ্ছা আচ্ছা, তো এইটা মানে, গেজেট থেকে যে বাদ দিলো এটা কি আপনারা জানতে পারছেন?
মতিউর রহমান: গেজেট থেকে বাদ দিছে কি দিছে না, এটা আমরা জানি না।
গোলাম মোস্তফা: গেজেট হইছে ’৭৩-এ। ৬৭৬ জনের গেজেট হইছে ’৭৩-এ।
ব্রাত্য রাইসু: পরবর্তী গেজেটটা আর নাই?
মতিউর রহমান: তবে এইটা, এই গেজেটটা, জিয়াউর রহমানের গেজেট আর সেভেনটি থ্রি’র গেজেট কিন্তু আলাদা, ওইটা জাস্ট আফটার লিবারেশন। আর এইটা ডিউরিং… জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি তখন হইছে… কমিটির মাধ্যমে হইছে।
ব্রাত্য রাইসু: আচ্ছা। জিয়াউর রহমানের করা জিয়াউর রহমানের জিনিসটা কি কমিটির মাধ্যমে হইছে, এটার বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি ওঠে নাই?
মতিউর রহমান: উঠছে কিনা আমি জানি না।
মো: সামসুদ্দিন: না তহন এমন কোনো আপত্তি ওঠে নাই।
ব্রাত্য রাইসু: তখন কেউ কোনো মুক্তিযোদ্ধারা আপত্তি করে নাই?
মো: সামসুদ্দিন: আমি শুনি নাই।
মতিউর রহমান: এটার রেকর্ড ওই মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের কল্যাণ বিভাগে আছে।
গোলাম মোস্তফা: এটা হলো–শহীদ আছে, জীবিত আছে, আহত আছে। ’৭৩-এ এই গেজেটটা হইছে, ওইটা ৬৭৬ জনের। ওখানে বীর শ্রেষ্ঠ ৭ জন, বীরউত্তম ৬৮ জন, বীরবিক্রম ১৭৫, বীরপ্রতীক ৪২৬–এই টোটাল ৬৭৬ জন, ’৭৩-এর গেজেটে আছে।
ব্রাত্য রাইসু: এবং ঊন আশি সালে আরেকটা গেজেট হইছিল?
গোলাম মোস্তফা: তা জানি না। ঊনাশি সালে কোনো গেজেট হয় নাই।
ব্রাত্য রাইসু: তাহলে জিয়ার গেজেট কবে হইলো?
গোলাম মোস্তফা: এইটা গেজেট হয় নাই… এইটা একটা কমিটির…
মতিউর রহমান: এইটা একটা কমিটির সিদ্ধান্ত।
ব্রাত্য রাইসু: কোন কমিটি এইটা?
মতিউর রহমান: এইটা জিয়াউর রহমানের আমলে একটা কমিটি হইছিল। এই কমিটি এ্যাপ্রুভ্ড্ বাই প্রেসিডেন্ট।
ব্রাত্য রাইসু: আচ্ছা মধু যে তার ডায়রিতে লিখছে যে শাহ আজিজুর রহমান আপনাদের কোনো একটা ফান্ডে টাকা দিছিলেন, এইটা কি ঠিক?
মতিউর রহমান: জানি না।
ব্রাত্য রাইসু: শাহ আজিজুর রহমান আসছিল জিয়ার সঙ্গে?
মো: সামসুদ্দিন: মধুর একটা স্মরণীয় কথা আমার মনে আছে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্যার সমাধার জন্য জিয়াউর রহমান যখন প্রেসিডেন্ট তখন ষোলজন মন্ত্রীসহ জিয়াউর রহমান আসছিল আমাদের বিশ্রামাগারে। তখন রাত্রিবেলা। এক নম্বর বাড়ি। ১/১ গজনবী রোডের বাড়ি। তহন সেই সাথে, ষোলজনের ভিতরে একজন প্রাইম মিনিস্টার ছিলো শাহ আজিজুর রহমান। সেই শাহ আজিজুর রহমান যখন আসলো, মধু জিয়াকে উদ্দেশ্য কইরা বললো যে, ‘স্যার আমি আপনাকে একটা কথা বলতে চাই।’ ‘কয়, হ্যাঁ বলেন।’ ‘মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণের জন্য শাহ আজিজ একটা কথা বলুক এইটা আমরা চাই না। দুইটা শ্বাস ফেলাইবো, ওনাকে আমি বাধ্য হবো এখান থেকে ঘাড় ধইরা বাইর কইরা দিতে।’তহন আমি ওনার পাশে বসা, মধুর পাশে। আর মধুর ডাইন পাশে জিয়াউর রহমান, এর ডাইনে ছিল শাহ আজিজ; কিন্তু দুই ঘণ্টা আমাদের সাথে মিটিং করলো, আমাদের সমস্যা সমাধার জন্য–শাহ আজিজ একটা কথাও বলতে পারে নাই কারণ আমরা মধুর সাথে একজোট, একমত ছিলাম। শাহ আজিজকে কথা বলতে দেই নাই দুই ঘণ্টা ধইরা। বাইর হইয়া গেছে, তারপরে আমাদের সমস্যার সমাধান যা কিছু করণীয় রাষ্ট্রপতি করছে। আমরা বলছি আমাদের পক্ষে শাহ আজিজ কোনো কিছু করুক এটা আমরা চাই না।
ব্রাত্য রাইসু: এটা কত সালের কথা বললেন… সাল মনে নাই?
মো: সামসুদ্দিন: সাল তো মনে নাই। মনে হয় ’৭৯ কিংবা ’৮০ তে হবে। মারা যাওয়ার আগের বছর।
ব্রাত্য রাইসু: জিয়া মারা যাওয়ার আগের বছর?
মো: সামসুদ্দিন: মারা যাওয়ার পরে আর বলব কার সাথে?… যেমন মধুর কথাও আপনারা কেউ বলতেছেন ‘নাই’, ‘মধু নামে কেউ ছিলো না’ আমি জানি, আমি সেভেনটি সিক্সে আইসা তাকে দেখলাম। সে আমার আগে কল্যাণ ট্রাস্টে তালিকাভুক্ত। আর পদকের কথাটা আমাদের মতি ভাই, মতিউর রহমান সাহেব যা বললেন, একেবারেই ধ্রুব সত্য। তা আমরা তো তহন… প্রথম কথা হইলো আমরা মুরুক্ষ; শিক্ষা-দীক্ষা, সমাজব্যবস্থা কিছুই জানি না। আমাকে বললো, ‘বীরপ্রতীক উপাধি দিলাম, ঠিক আছে?’ আমি বললাম, ‘স্যার ঠিক আছে।’
ব্রাত্য রাইসু: কে বললো এই কথা?
মো: সামসুদ্দিন: জিয়াউর রহমান বললো। কিন্তু এহন তো বুঝি বীরপ্রতীক কী আর বীরবিক্রম কী। তহন সেইটা বুঝতাম না। আর যুদ্ধে যহন যাই, যুদ্ধ যহন করি, তহন আমি এইটা ভাবতাম না–আমি যুদ্ধ করবো, যুদ্ধাহত হবো, বীর বিক্রম বা বীর প্রতীক পদকে বা খেতাবে ভূষিত হবো, আমার কল্যাণের জন্য একটা কল্যাণ ট্রাস্ট থাকবে, আমি অনেক টাকা রাষ্ট্রীয়-সম্মানী ভাতা পাবো এই কথা তখন আমি কল্পনাও করতাম না। এহন যেটা ভাবি। আর এহন যেই বাড়িতে আসছেন সেই বাড়িটা হলো আমি, আমাদের। আঠারোজন মুক্তিযোদ্ধা বসবাস করি। আমি হইলাম প্রথমজন, এভাবে পর্যায়ক্রমে আঠারো জনের… এই বাড়ির মালিক আমরা।… কল্যাণ ট্রাস্ট মালিক না, কিন্তু আমরা মালিক। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা যারা বসবাস করে।
অদিতি ফাল্গুনী: সবাই মিলে এই বাড়িটা কিনেছেন?
মো: সামসুদ্দিন: কিনি নাই… কিনব কেন! কিনবার লাইগা রক্ত…! খালি যা শুধু আবেদন করছি… কিনলে দুইশ কোটি টাকা, কইত্থেকে দিমু। আমাকে মাত্র চব্বিশ হাজার টাকা ভাতা দেয়।
৫.
অদিতি ফাল্গুনী: আচ্ছা, আর আপনারা দুইজন… আপনারা কি কথা বলবেন?
ব্রাত্য রাইসু: আপনারা কি কথা বলবেন? মধুর সঙ্গে আপনাদের পরিচয় ছিলো?
মো: শুকুর আলী: আমার সাথে পরিচয় ছিল।
ব্রাত্য রাইসু: তাইলে মধু ভুয়া–আপনারা এইটা বিশ্বাস করেন না?
মো: শুকুর আলী: মধুর সঙ্গে আমার একেবারে…।
মো: সামসুদ্দিন: মধু ভুয়া যে বলে সে পাগল। নাইলে ছাগল। এইরকম কিছু হবে।… মধু ভুয়া এই কথা যে বলে সে পাগল অথবা ছাগল।
মতিউর রহমান: মধু যে মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা–এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নাই।
মনোয়ারা সামসুদ্দিন: ভুয়া কেন বলে? কে বলছে ভুয়া?
মো: সামসুদ্দিন: মধু ভুয়া এ কথা আপনারা… আবারো বলি শোনেন, মধু ভুয়া এ কথা যে বলে সে ছাগল অথবা পাগল।
ব্রাত্য রাইসু: [মনোয়ারা সামসুদ্দিনকে] আপনিও দেখছেন নাকি মধুরে?
মনোয়ারা সামসুদ্দিন: হ্যাঁ।
ব্রাত্য রাইসু: আপনারা কি টাকা খাইয়া বলতেছেন না তো?
মনোয়ারা সামসুদ্দিন: মধু একজন সত্যিকারই মুক্তিযোদ্ধা। টাকা খেয়ে বলবো কেন? আমরা একসাথে চলাফেরা করছি না? আমাদের বাসায় আইছে গেছে সবসময়।
ব্রাত্য রাইসু: কেমন লোক ছিলেন উনি?
মতিউর রহমান: কারণ সে একজন স্পষ্টবাদী ছিলেন এটা সত্যি কথা।
মো: সামসুদ্দিন: প্রধানমন্ত্রী ছিলো জিয়াউর রহমান… আরে শাহ আজিজ। শাহ আজিজকে বললো সামনাসামনি… এতটুক দূরে… আমাদের কল্যাণের জন্য শাহ আজিজ বলুক এটা আমরা চাই না। আমরা চাই, যদি এখানে বসে, একটা জোরে শ্বাস ফেলাইব… শ্বাস ফেলাইলে তাকে আমি বাধ্য হবো ঘাড় ধইরা বাইর কইরা দিতে।… মধু এক্কেবারে, এরকম সামনাসামনি, এক গজ দূরে–দুইগজ দূরে।
ব্রাত্য রাইসু: জিয়া কিছু বললো না এইটা শুইনা?
মো: সামসুদ্দিন: মাত্থা খারাপ! জিয়াকেও বাইর কইরা দিতাম আমরা!
ব্রাত্য রাইসু: তাই নাকি?
মো: সামসুদ্দিন: কী মনে করেন? হ্যাঁ। আমরা দেশ এবং জাতির জন্য যুদ্ধ করছি। জিয়াউর রহমানের সময় আমরা ফ্রি স্টাইলে চলাফেরা করছি। যত্ত কিছু বলেন, কেউরে ভয় পাইতাম না, যা খুশি বলতে পারতাম। বাধ্য হইতাম জিয়াকে ওই কথা বলতে কারণ আমাদের প্রতি জিয়া এইরকম ভাব দেখায় নাই কোনোদিন। আমাদেরকে ভালবাসত।
ব্রাত্য রাইসু: আচ্ছা আচ্ছা, আপনার নাম হইলো… কী? আপনার নামটা বলেন?
মো: সামসুদ্দিন: আমি মো: সামসুদ্দিন বীর প্রতীক।
৬.
ব্রাত্য রাইসু: আচ্ছা আপনি [মতিউর রহমানকে] কী জানি বলতেছিলেন যে… মধুর এলাকায় গেছিলেন আপনি?
মতিউর রহমান: হ্যাঁ, সে মুক্তিযোদ্ধা এতে কোনোরকম সন্দেহ নাই।
ব্রাত্য রাইসু: আপনি কি তার এলাকায় গেছিলেন?
মতিউর রহমান: আমি তার বাড়িতে পর্যন্ত গেছি।
ব্রাত্য রাইসু: উনার বাড়ি কোথায়?
মতিউর রহমান: উনার বাড়ি হচ্ছে চাপাঁইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানায়।… হুইলচেয়ার হওয়ার পরে সে বিয়ে করছে সেই বউ এখনো আছে। সেই বউ ভাতা পাচ্ছে।
৭.
আবুল কাশেম : না মধু ভাইয়ের সমন্ধে কথা বলা এইটা…মানে বিশালই একটা ব্যাপার!
৮.
মতিউর রহমান: …ডাক্তার মাইনউদ্দিন…
ব্রাত্য রাইসু: ডাক্তার মাইনউদ্দিন কে?
মতিউর রহমান: ওই সময় সে সাত নম্বর-এর সাবসেক্টর কমান্ডার ছিলো। আমি তার সাথেও কথা বলছি। সে এখন জীবিত না। মারা গেছে। মধু মুক্তিযোদ্ধা এতে কোনোরকম সন্দেহ নাই। একজন নির্ভেজাল মুক্তিযোদ্ধা ছিল।
৯.
আবদুস সোবাহান মন্টু: আচ্ছা কোন লোকটা কইতে পারে এই কথাটা!…
১০.
মতিউর রহমান: হ্যাঁ তবে তার একটা দোষ ছিলো সে হচ্ছে ঠোঁটকাটা ছিলো। ঠোঁটকাটা বোঝেন তো?… সত্য কথা অকপটে বলে দিতো। এইটা হচ্ছে তার দোষ ছিলো।
১১.
আবদুস সোবাহান মন্টু: ওর সাহসটা কী আমি খালি চিন্তা করতেছি!
ব্রাত্য রাইসু: কার?
আবদুস সোবাহান মন্টু: ওই যে লোক বলছে… যে আমরা তো আজীবন… আমি তো আসলে প্রথম জীবন থেকে আমি… আমি তো প্রথম জীবনের একবারে উনার… মধু ভাইয়ের।
ব্রাত্য রাইসু: মধু ভাইয়ের প্রথম জীবনের লোক?
মনোয়ারা সামসুদ্দিন: হ্যাঁ হ্যাঁ । এই যে মধু কামড় দিয়া গোস খাইয়া লাইছে, এই যে।
আবদুস সোবাহান মন্টু: খুব রাগী লোক ছিল।
মনোয়ারা সামসুদ্দিন: রাগের চোটে… রাগের চোটে কামড় মারছিল হাতের মধ্যে।
আবদুস সোবাহান মন্টু: আরে না না, এই সব কী! ছিঃ ছিঃ ছিঃ, আল্লা এইটা টেপ হইতেছে! ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
মনোয়ারা সামসুদ্দিন: আল্লা, খারাপ কই নাই তো।
ব্রাত্য রাইসু : আচ্ছা আপনি বললেন যে, মধুরে যে বিশ্বাস করে না…?
আবদুস সোবাহান মন্টু: না, আমি তারে দেখতে চাই যে আসলে সে কে? সে কী চেনে? আমি উনার বাড়িতে গেছি, উনার দেশে গেছি, সব জায়গায় গেছি।
মোহাম্মদপুর, ২৪ ডিসেম্বর ২০১১
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর আর্টস-এ প্রকাশিত অদিতী ফাল্গুনী সংকলিত মোদাস্বার হোসেন মধুর ডায়রির লিংক এখানে: এক মৃত মুক্তিযোদ্ধার দিনপঞ্জির পাতা থেকে…।